ভূমি সংক্রান্ত দরকারি তথ্য ও আইন || Useful information and laws related to land.
ভূমি বিষয়ক তথ্য-খতিয়ান, সি.এস রেকর্ড, এস.এ খতিয়ান, নাম জারী, জমা খারিজ, পর্চা, তফসিল, মৌজা, খাজনা, ওয়াকফ, মোতওয়াল্লী, ওয়ারিশ
০১। খতিয়ান কী?-মৌজা ভিত্তিক এক বা একাধিক ভূমি মালিকের ভূ-সম্পত্তির বিবরন সহ যে ভূমি রেকর্ড জরিপকালে প্রস্তুত করা হয় তাকে খতিয়ান বলে।
০২। সি,এস রেকর্ড কী?
-সি. এস হল ক্যাডাস্টাল সার্ভে। আমাদের দেশে জেলা ভিত্তিক প্রথম যে নক্সা ও ভূমি রেকর্ড প্রস্তুত করা হয় তাকে সি. এস রেকর্ড বলা হয়।
০৩। এস. এ খতিয়ান কী?
-সরকার কর্তৃক ১৯৫০ সনে জমিদারি অধিগ্রহন ও প্রজাস্বত্ব আইন জারি করার পর যে খতিয়ান প্রস্তুত করা হয় তাকে এস. এ খতিয়ান বলা হয়।
০৪। নাম জারী কী ?
-উত্তরাধিকার বা ক্রয় সূত্রে বা অন্যকোন প্রক্রিয়ায় কোন জমি থেকে নতুন মালিক হলে তার নাম খতিয়ান ভূক্ত করার প্রক্রিয়া কে নামজারী বলে।
০৫। জমা খারিজ কী?
-জমা খারিজ অর্থ যৌথ জমা বিভক্ত করে আলাদা করে নতুন খতিয়ান সৃষ্টি করা। প্রজার কোন জোতের কোন জমি হস্তান্তর বা বন্টনের কারনে মূল খতিয়ান থেকে কিছু জমি নিয়ে নুতন জোত বা খতিয়ান খোলাকে জমা খারিজ বলা হয়।
০৬। পর্চা কী?
-ভূমি জরিপ কালে প্রস্তুতকৃত খসড়া খতিয়ান যে অনুলিপি তসদিক বা সত্যায়নের পূর্বে ভূমি মালিকের নিকট বিলি করা হয় তাকে মাঠ পর্চা বলে। রাজস্ব অফিসার কর্তৃক পর্চা সত্যায়িত বা তসদিক হওয়ার পর আপত্তি এবং আপিল শোনানির শেষে খতিয়ান চুরান্ত ভাবে প্রকাশিত হওয়ার পর ইহার অনুলিপিকে পর্চা বলা হয়।
০৭। তফসিল কী?
-তফসিল অর্থ জমির পরিচিতিমূলক বিস্তারিত বিবরন। কোন জমির পরিচয় প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট মৌজার নাম, খতিয়ান নং, দাগ নং, জমির চৌহদ্দি, জমির পরিমান ইত্যাদি তথ্যসমৃদ্ধ বিবরন কে তফসিল বলে।
০৮। মৌজা কী?
-ক্যাডষ্টাল জরিপের সময় প্রতিথানা এলাকাকে অনোকগুলো এককে বিভক্ত করে প্রত্যেকটি একক এর ক্রমিক নং দিয়ে চিহ্নিত করে জরিপ করা হয়েছে। থানা এলাকার এরুপ প্রত্যেক টি একককে মৌজা বলে। এক বা একাধিক গ্রাম বা পাড়া নিয়ে একটি মৌজা ঘঠিত হয়।
০৯। খাজনা কী?
-ভূমি ব্যবহারের জন্য প্রজার নিকট থেকে সরকার বার্ষিক ভিত্তিতে যে ভুমিকর আদায় করে তাকে ভুমির খাজনা বলা হয়।
১০। ওয়াকফ কী?
-ইসলামি বিধান মোতাবেক মুসলিম ভূমি মালিক কর্তৃক ধর্মীয় ও সমাজকল্যানমুলক প্রতিষ্ঠানের ব্যয়ভার বহন করার উদ্দেশ্যে কোন সম্পত্তি দান করাকে ওয়াকফ বলে।
-ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধান যিনি করেন তাকে মোতওয়াল্লী বলে। মোতওয়াল্লী ওয়াকফ প্রশাসকের অনুমতি ব্যতিত ওয়াকফ সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারেন না।
১২। ওয়রিশ কী?
-ওয়ারিশ অর্থ ধর্মীয় বিধানের আওতায় উত্তরাধিকারী। কোন ব্যক্তি উইল না করে মৃত্যুবরন করলে আইনের বিধান অনুযায়ী তার স্ত্রী, সন্তান বা নিকট আত্নীয়দের মধ্যে যারা তার রেখে যাওয়া সম্পত্তিতে মালিক হন এমন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে ওয়ারিশ বলা হয়।
১৩। ফারায়েজ কী?
-ইসলামি বিধান মোতাবেক মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি বন্টন করার নিয়ম ও প্রক্রিয়াকে ফারায়েজ বলে।
১৪। খাসজমি কী?
-ভূমি মন্ত্রনালয়ের আওতাধিন যে জমি সরকারের পক্ষে কালেক্টর তত্ত্বাবধান করেন এমন জমিকে খাস জমি বলে।
১৫। কবুলিয়ত কী?
-সরকার কর্তৃক কৃষক কে জমি বন্দোবস্ত দেওয়ার প্রস্তাব প্রজা কর্তৃক গ্রহন করে খাজনা প্রদানের যে অংঙ্গিকার পত্র দেওয়া হয় তাকে কবুলিয়ত বলে।
১৬। দাগ নং কী?
-মৌজায় প্রত্যেক ভূমি মালিকের জমি আলাদাভাবে বা জমির শ্রেনী ভিত্তিক প্রত্যেকটি ভূমি খন্ডকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করার লক্ষ্যে সীমানা খুঁটি বা আইল দিয়ে স্বরজমিনে আলাদাভাবে প্রদর্শন করা হয়। মৌজা নক্সায় প্রত্যেকটি ভূমি খন্ডকে ক্রমিক নম্বর দিয়ে জমি চিহ্নিত বা সনাক্তকরার লক্ষ্যে প্রদত্ত্ব নাম্বার কে দাগ নাম্বার বলে।
১৭। ছুট দাগ কী?
-ভূমি জরিপের প্রাথমিক পর্যায়ে নক্সা প্রস্তুত বা সংশোধনের সময় নক্সার প্রত্যেকটি ভূ-খন্ডের ক্রমিক নাম্বার দেওয়ার সময় যে ক্রমিক নাম্বার ভুল ক্রমে বাদ পরে যায় অথবা প্রাথমিক পর্যায়ের পরে দুটি ভূমি খন্ড একত্রিত হওয়ার কারনে যে ক্রমিক নাম্বার বাদ দিতে হয় তাকে ছুটদাগ বলা হয়।
১৮। চান্দিনা ভিটি কী?
-হাটবাজারের স্থায়ী বা অস্থায়ী দোকান অংশের অকৃষি প্রজা স্বত্ত্ব এলাকাকে চান্দিনা ভিটি বলা হয়।
১৯। অগ্র ক্রয়াধিকার কী?
-অগ্র ক্রয়াধিকার অর্থ সম্পত্ত্বি ক্রয় করার ক্ষেত্রে আইনানুগভাবে অন্যান্য ক্রেতার তুলনায় অগ্রাধিকারপ্রাপ্য তার বিধান। কোন কৃষি জমির মালিক বা অংশিদার কোন আগন্তুকের নিকট তার অংশ বা জমি বিক্রির মাধ্যমে হস্তান্তর করলে অন্য অংশিদার কর্তৃক দলিলে বর্নিত মূল্য সহ অতিরিক্ত১০% অর্থ বিক্রি বা অবহিত হওয়ার ৪ মাসের মধ্যে আদালতে জমা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে জমি ক্রয় করার আইনানুগ অধিকারকে অগ্রক্রয়াধিকার বলা হয়।
২০। আমিন কী?
-ভূমি জরিপের মধ্যমে নক্সা ও খতিয়ান প্রস্তুত ও ভূমি জরিপ কাজে নিজুক্ত কর্মচারীকে আমিন বলা হত।
২১। সিকস্তি কী?
-নদী ভাংঙ্গনে জমি পানিতে বিলিন হয়ে যাওয়াকে সিকস্তি বলা হয়। সিকস্তি জমি ৩০ বছরের মধ্যে স্বস্থানে পয়স্তি হলে সিকস্তি হওয়ার প্রাককালে যিনি ভূমি মালিক ছিলেন, তিনি বা তাহার উত্তরাধিকারগন উক্ত জমির মালিকানা শর্ত সাপেক্ষ্যে প্রাপ্য হবেন।
২২। পয়স্তি কী?
-নদী গর্ভ থেকে পলি মাটির চর পড়ে জমির সৃষ্টি হওয়াকে পয়স্তি বলা হয়।
২৩। নালজমি কী?
-সমতল ২ বা ৩ ফসলি আবাদি জমিকে নাল জমি বলা হয়।
২৪। দেবোত্তর সম্পত্তি কী?
-হিন্দুদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদির আয়োজন, ব্যবস্থাপনা ও সু-সম্পন্ন করার ব্যয় ভার নির্বাহের লক্ষ্যে উৎসর্গকৃত ভূমিকে দেবোত্তর সম্পত্তি সম্পত্তি বলা হয়।
২৫। দাখিলা কী?
-ভূমি মালিকের নিকট হতে ভূমিকর আদায় করে যে নির্দিষ্ট ফরমে (ফরম নং-১০৭৭) ভূমিকর আদায়ের প্রমান পত্র বা রশিদ দেওয়া হয় তাকে দাখিলা বলে।
২৬। ডি.সি.আর কী?
-ভূমি কর ব্যতিত অন্যান্য সরকারি পাওনা আদায় করার পর যে নির্ধারিত ফরমে (ফরমনং-২২২) রশিদ দেওয়া হয় তাকে ডি.সি.আর বলে।
২৭। দলিল কী?
-যে কোন লিখিত বিবরনি যা ভবিষ্যতে আদালতে স্বাক্ষ্য হিসেবে গ্রহন যোগ্য তাকে দলিল বলা হয়। তবে রেজিষ্ট্রেশন আইনের বিধান মোতাবেক জমি ক্রেতা এবং বিক্রেতা সম্পত্তি হস্তান্তর করার জন্য যে চুক্তি পত্র সম্পাদন ও রেজিষ্ট্রি করেন তাকে সাধারন ভাবে দলিল বলে।
ফেইসবুক থেকে সংগৃহীত।
লিঙ্ক:
লিঙ্ক:
--------------------------------------
আরও দেখুন-
------------------------------------------------------
আর্টিকেলটি ভালো লাগলে নিচের ফেসবুক, টুইটার বা গুগল প্লাসে
শেয়ার করে আপনার টাইমলাইনে রেখে দিন। এতক্ষণ সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
কোন মন্তব্য নেই