পারিবারিক পেনশন || উত্তরাধিকার মনোনয়ন যেভাবে।
পারিবারিক পেনশন: উত্তরাধিকার মনোনয়ন যেভাবে।
পারিবারিক পেনশন- উত্তরাধিকার মনোনয়ন যেভাবে। পেনশন ও আনুতোষিকের উদ্দেশ্যে পরিবারের সদস্যদের মনোনয়ন সংক্রান্ত বিধানসমূহ নিম্নরূপ:-
১। পারিবারিক পেনশনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর চাকরিতে থাকা অবস্থায় অথবা পরবর্তী যে কোন সময়ে তাঁহার পরিবারের যে কোন এক বা একাধিক সদস্যকে তাঁহার পারিবারিক পেনশনের সম্পূর্ণ বা অংশ বিশেষের উত্তরাধিকারী মনোনয়ন করিতে পারিবেন। মনোনয়নের অবর্তমানে পারিবারিক পেনশন ও আনুতোষিক প্রদানের ক্ষেত্রে তাঁহার সর্বশেষ নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ তৎকালীন অর্থ ও রাজস্ব বিভাগের ১৬-০৪-১৯৫৯ তারিখের স্মারক নং ২৫৬৬(৪০)-এফ এবং অর্থ বিভাগের ২৮-০৫-২০১২ খ্রিঃ তারিখের স্মারক নং ০৭.০০.০০০০. ১৭১.১৩.০০২. ১২.(অংশ-১)-৫৭ অনুসরণে উত্তরাধিকারী নির্ণয় করিবেন। মৃত পেনশনারের স্ত্রী/স্বামী পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন নাই এই মর্মে স্থানীয় পৌরসভা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান/ মেট্রোপলিটন এলাকার ক্ষেত্রে কাউন্সিলর/সর্বশেষ নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ-এর প্রদত্ত সার্টিফিকেট গ্রহনযোগ্য হইবে।
কোর্ট হইতে সাকসেশন সার্টিফিকেট বাধ্যবাধকতা থাকিবে না। কর্মচারীর বিধবা স্ত্রী পুনঃবিবাহে আবদ্ধ না হওয়ার শর্তে আজীবন পারিবারিক পেনশন প্রাপ্য হইবেন। তবে কর্মচারীর বিধবা স্ত্রীর পুনঃবিবাহ না করার অংগীকার-নামা বা প্রত্যয়নপত্র দাখিলের শর্ত ৫০ -এর উর্দ্ধ বয়সী বিধবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না। (স্মারক নং-অম/অবি/এবি-১/৩a ২/২০০৫(অংশ-১)/৫ তারিখ : ২৭ জানুয়ারি, ২০০৯)।
২। ফিন্যান্স এন্ড রেভিনিউ ডিপার্টমেন্টের অডিট ব্রাঞ্চের স্মারক নং 2566(40) F, তারিখ: ১৬ এপ্রিল, ১৯৫৯ এর সেকশন-১ এর অনুচ্ছেদ-২ তে পরিবারের সদস্যদের মনোনয়ন সংক্রান্তে নিম্নরূপ বিধান রহিয়াছে-
(১) পেনশনযোগ্য চাকরিকাল ৫ বৎসর পূর্ণ হওয়ার সংগে সংগে তাহার মৃত্যুতে আনুতোষিকের অর্থ গ্রহণের জন্য পরিবারের এক বা একাধিক সদস্যের অনুকূলে নির্ধারিত ফরমে মনোনয়ন পত্র দাখিল করিতে হইবে। অনুচ্ছেদ-২(২)।
(২) পরিবারের একাধিক সদস্যকে মনোনয়নের ক্ষেত্রে প্রত্যেকের প্রাপ্য অংশ মননানয়নপত্রে উল্লেখ করিতে হইবে। অনুচ্ছেদ-২(৩)
(৩) চাকরিজীবীর পূর্বে মনোনীত ব্যক্তির মৃত্যু ঘটিলে মনোনীত ব্যক্তির অংশ পরিবারের অন্য কোন সদস্য/সদস্যগণের মধ্যে স্থানান্তরিত হইবে মর্মে মনোনয়নপত্রে বিধান রাখা যাইবে। কোন নির্দিষ্ট ঘটনার উল্লেখপূর্বক উহার প্রেক্ষিতে মনোনয়নপত্র বাতিল হইয়া যাইবে মর্মেও মনোনয়নপত্রে বিধান রাখা যাইবে। অনুচ্ছেদ-২(৪)
(৪) চাকরিজীবী যে কোন সময় লিখিত নোটিশের মাধ্যমে পূর্ব প্রদত্ত মনোনয়নপত্র বাতিল করিতে পারিবেন। এইরূপ বাতিলের ক্ষেত্রে বাতিলের নোটিশের সহিত নতুন মনোনয়নও প্রেরণ করিবেন। অনুচেছদ-২(৬)
(৫) চাকরিজীবীর পূর্বে মনোনীত ব্যক্তির মৃত্যু ঘটিলে এবং মনোনীত ব্যক্তির মৃত্যুতে তাহার অংশ অন্য সদস্যদের মধ্যে স্থানান্তরের বিধান মনোনয়নপত্র থাকার ক্ষেত্রে অথবা মনোনয়নপত্রে উল্লেখিত ঘটনা সংঘটিত হওয়া কারণে মনোনয়নপত্র বাতিল হইয়া পড়িলে চাকরিজীবী লিখিতভাবে পূর্ণ মনোনয়ন বাতিলপূর্বক নতুন মনোনয়নপত্র দাখিল করিবেন। অনুচেছদ-২(৭)
(৬) গেজেটেড কর্মকর্তাগণ হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার নিকট এবং নন-গেজেটেড কর্মচারীগণ অফিস প্রধানের নিকট মনোনয়নপত্র বাতিলের নোটিশ দাখিল করিবেন। অফিস প্রধান নন-গেজেটেড কর্মকর্তার নিকট হইতে মনোনয়নপত্র প্রাপ্তির পর অফিস প্রধান প্রাপ্তির তারিখ উল্লেখপূর্বক প্রতিস্বাক্ষর করিয়া তাহা সংরক্ষণ করিবেন। অনুচ্ছেদ-২(৮)।
(৭)মনোনয়নপত্র/মনোনয়নপত্র বাতিলের নোটিশ হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা/অফিস প্রধান কর্তৃক প্রাপ্তির তারিখ হইতে কার্যকর হইবে। অনুচ্ছেদ-২(৯)
খ। যে যে ক্ষেত্রে মনোনয়ন আপনা হইতে বাতিল হইয়া যায়ঃ
ফিন্যান্স এন্ড রেভিনিউ ডিপার্টমেন্টের অডিট ব্রাঞ্চের স্মারক নং 2566(40)F, তারিখ: ১৬ এপ্রিল, ১৯৫৯ এর বিধান অনুসারে নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র আপনা হইতে অকার্যকর হইয়া পড়ে-
(১) চাকরিজীবীর পূর্বে মনোনীত ব্যক্তির মৃত্যু ঘটিলে।
(২) মনোনীত ব্যক্তি চাকরিজীবীর পরিবারের সদস্য না থাকিলে। যেমন- বিবাহ বিচেছদের কারণে স্বামী/স্ত্রী চাকরিজীবীর পরিবারের সদস্য থাকেন না বিধায় স্বামী/স্ত্রীর অনুকূলে ইতোপূর্বে প্রদত্ত মনোনয়ন আপনা হইতে অকার্যকর হইয়া পড়ে।
(৩) মনোনয়নপত্রে কোন নির্দিষ্ট ঘটনা সংঘটিত হওয়ার কারণে মনোনয়ন বাতিল হওয়ার শর্ত আরোপ করার ক্ষেত্রে উক্ত নির্দিষ্ট ঘটনাটি সংঘটিত হওয়ার সংগে সংগে।
পেনশন ও আনুতোষিকের উদ্দেশ্যে মনোয়ন প্রাপ্তির যোগ্য ব্যক্তিগণঃ
ফিন্যান্স এন্ড রেভিনিউ ডিপার্টমেন্টের অডিট ব্রাঞ্চের স্মারক নং 2566(40)F, তারিখ: ১৬ এপ্রিল, ১৯৫৯ এর সেকশন-১ এর অনুচ্ছেদ-২ এবং উক্ত স্মারকের সহিত সংযুক্ত ফরম A ও B অনুযায়ী পেনশনের উদ্দেশ্যে কেবল পরিবারে সদস্যদেরকেই মনোনয়ন দেওয়া যাইবে। পরিবারের সদস্য নয় এমন কোন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়া যাইবে না। দেওয়া হইলেও তাহা আপনা হইতে অকার্যকর হইয়া পড়িবে এবং উক্তক্ষেত্রে উপরোক্ত স্মারকের সেকশন-১ অনুচ্ছেদ অনুসারে আনুতোষিক এবং উক্ত স্মারকের ৫নং অনুচ্ছেদ অনুসারে পেনশন প্রদেয় হইবে।
মনোনীত ব্যক্তির অধিকারঃ
বৈধ মনোয়ন থাকার ক্ষেত্রে চাকরিজীবী কর্তৃক মনোনীত ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ মনোয়নপত্রে উল্লেখিত হারে আনুতোষিক ও পেনশন প্রাপ্য।
মনোনয়নের কোন অংশ বাতিল হওয়ার ক্ষেত্রে বা কোন অংশের মনোয়ন না থাকার ক্ষেত্রে বিধানঃ
চাকরিজীবীর পূর্বে মনোনীত ব্যক্তির মৃত্যুর কারণে, বিবাহ বিচ্ছেদের কারণে মনোয়ন পত্রে আরোপিত শর্তের কারণে কোন সদস্যের মনোয়ন বাতিল/অকার্যকর হইয়া পড়িলে উক্ত সদস্যের অংশ পরিবারের সকল যোগ্য সদস্যদের মধ্যে সমহারে বন্টিত হইবে। পূর্ণ অংশের জন্য মনোয়ন না থাকার ক্ষেত্রে যে অংশের জন্য কোন মনোয়ন নাই উক্ত অংশও পরিবারের যোগ্য সদস্যদের মধ্যে সমহারে বন্টিত হইবে। (স্মারক নং ২৫৬৬(৪০)-ঋ, তারিখ : ১৬ এপ্রিল, ১৯৫৯)
উদাহরণ: একজন চাকরিজীবীর ২ স্ত্রী, ১ পুত্র থাকা অবস্থায় তিনি দ্বিতীয় স্ত্রী ও পুত্রের প্রত্যেককে ১/২ অংশ হারে মনোয়ন প্রদান করেন। প্রথম স্ত্রীর অনুকূলে কোন মনোয়ন প্রদান করেন নাই। কিন্তু চাকরিজীবীর পূর্বেই দ্বিতীয় স্ত্রী মৃত্যুবরণ করেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর মৃত্যুর পরে চাকরিজীবী নতুনভাবে কোন মনোয়ন প্রদান না করেই মৃত্যুবরণ করেন। এইক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্ত্রীর অনুকূলে মনোয়নকৃত ১/২ অংশ প্রথম স্ত্রী এবং পুত্রের অনুকূলে সমহারে অর্থাৎ ১/৪ অংশ হারে বন্টিত হইবে। অর্থাৎ প্রথম স্ত্রীর অংশ হইবে ১/৪ এবং পুত্রের অংশ হইবে (১/২+১/৪)= ৩/৪।
সূত্র: মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়া রচিত “পেনশন বিধিমালা”
দ্বাদশ সংস্করণ।
--------------------------------------
আরও দেখুন-
------------------------------------------------------
আর্টিকেলটি ভালো লাগলে নিচের ফেসবুক, টুইটার বা গুগল প্লাসে
শেয়ার করে আপনার টাইমলাইনে রেখে দিন। এতক্ষণ সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
কোন মন্তব্য নেই